নির্মল কর, মঙ্গল করে মলিন মর্ম মুছায়ে’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে দুই বছর বিরতির পর বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) সকাল ৯টার দিকে টিএসসির রাজু ভাস্কর্য প্রাঙ্গণ থেকে এ মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হয়েছে। এ শোভাযাত্রা স্মৃতি চিরন্তন হয়ে পুনরায় টিএসসিতে গিয়ে শেষ হবে। শোভাযাত্রাটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।
বর্ষবরণের সকালে মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ নিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ টিএসসি এলাকায় হাজির হন।
শোভাযাত্রায় অংশ নিতে আসা নারীদের অনেকের পরনে শাড়ি আর মাথায় নানা রঙের ফুল। পুরুষদের গায়ে পাঞ্জাবি।
এদিকে এ শোভাযাত্রা ঘিরে গতকাল বুধবার রাত থেকেই টিএসসিসহ পুরো ক্যাম্পাস এলাকায় কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়। মোতায়েন আছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্যও।
বর্ষবরণের সবচেয়ে আকর্ষণীয় আনুষ্ঠানিকতা হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের এ মঙ্গল শোভাযাত্রা। ১৯৮৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে বের হয় প্রথম মঙ্গল শোভাযাত্রা। ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর ইউনেস্কো এ শোভাযাত্রাকে বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের মর্যাদা দেয়। মঙ্গল শোভাযাত্রায় এবার চারটি বড় মোটিভ রয়েছে। এসবের মধ্যে রয়েছে ঘোড়া, পাখি, টেপা পুতুল ও মাছ।
এদিকে রমনার বটমূলে দুই বছর পর আবারও তৈরি হয়েছে মঞ্চ। এ মঞ্চ থেকে পহেলা বৈশাখে গান-পাঠ-আবৃত্তিতে স্বাগত জানানো হচ্ছে নতুন বঙ্গাব্দ ১৪২৯–কে। গত অর্ধশতাব্দীর বেশি সময় ধরে দেশের অন্যতম প্রধান সংগীত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছায়ানটের আয়োজনে বর্ষবরণের সংগীতানুষ্ঠান হয়ে আসছে।
১৯৬৭ সালে ছায়ানটের আয়োজনে প্রথম রমনার বটমূলে পহেলা বৈশাখের সূর্যোদয়ের সময় সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল এরপর কেবল ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বৈরী পরিবেশের কারণে অনুষ্ঠান হতে পারেনি। আর করোনার কারণে বন্ধ ছিল দুই বছর।
বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে সকালে পান্তা ইলিশ খাওয়ার রীতি চালু হলেও এবার রমজানের কারণে তা সম্ভব হয়নি।
গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি অনুসারে বাংলাদেশে প্রতিবছর ১৪ এপ্রিল এ উৎসব পালিত হয়। বাংলা একাডেমি নির্ধারিত আধুনিক বাংলা পঞ্জিকা অনুসারে এ দিন নির্দিষ্ট করা হয়েছে।